গণধর্ষণ নাকি আত্মহত্যা! রহস্যময় অডিও ক্লিপ থেকেই মোড় ঘুরবে কৃষ্ণনগর কাণ্ডের?

তরুণীর মোবাইল ফোন থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ অডিও ক্লিপ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ক্লিপটি তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেই হোয়াটসঅ্যাপে আপলোড করা হয়েছিল। সেই অডিওতে একটি মহিলাকণ্ঠকে বলতে শোনা যায়, "তার মৃত্যুর জন্য তিনি নিজেই দায়ী।" অডিওটির প্রকৃত পরিচয় এবং সেটি তরুণীর নিজের কণ্ঠ কি না, তা এখনো তদন্তাধীন। তবে এই ক্লিপের কথা প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশ আত্মহত্যার সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে তদন্তের দিক পরিবর্তন করেছে।

গণধর্ষণ নাকি আত্মহত্যা! রহস্যময় অডিও ক্লিপ থেকেই মোড় ঘুরবে কৃষ্ণনগর কাণ্ডের?

খবর সাতদিন ডেস্ক, 19 অক্টোবর: কৃষ্ণনগরের তরুণী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে নতুন তথ্য, যা পুরো বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছে। প্রথমদিকে তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, যে তাকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তবে তদন্তের প্রাথমিক ধাপেই সেই অভিযোগ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নতুন করে উঠে আসছে আত্মহত্যার তত্ত্ব, যা সম্পূর্ণ আলাদা একটি দিক খুলে দিয়েছে তদন্তকারীদের সামনে।

হোয়াটসঅ্যাপ অডিও ক্লিপ ও তার গুরুত্ব:

তরুণীর মোবাইল ফোন থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ অডিও ক্লিপ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ক্লিপটি তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেই হোয়াটসঅ্যাপে আপলোড করা হয়েছিল। সেই অডিওতে একটি মহিলাকণ্ঠকে বলতে শোনা যায়, "তার মৃত্যুর জন্য তিনি নিজেই দায়ী।" অডিওটির প্রকৃত পরিচয় এবং সেটি তরুণীর নিজের কণ্ঠ কি না, তা এখনো তদন্তাধীন। তবে এই ক্লিপের কথা প্রকাশ্যে আসার পর পুলিশ আত্মহত্যার সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে তদন্তের দিক পরিবর্তন করেছে।

মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিভ্রান্তি:

১৬ অক্টোবর সকালে কৃষ্ণনগর পুলিশ সুপারের অফিস থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে একটি অর্ধনগ্ন ও অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, তরুণীকে অ্যাসিড ঢেলে পোড়ানো হয়েছে এবং গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। পরিবারও সেই অভিযোগ তুলেছিল। পরে ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, তরুণীর শরীরে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে মৃত্যুর আগে তার গায়ে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এখন প্রশ্ন উঠছে, ওই আগুন তরুণী নিজেই ধরিয়েছিলেন, নাকি অন্য কেউ?

ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক তদন্তের ফলাফল:

১৭ অক্টোবর বিকেলে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তে জানানো হয়, তরুণীর শরীরে ধর্ষণের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তদন্ত হওয়ায় ময়নাতদন্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছিল। তবে তার মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা তরুণীর দেহের অগ্নিকাণ্ডের সময়সূচী সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন, কিন্তু তিনি নিজে আগুন ধরিয়েছিলেন না কি অন্য কেউ সেটি নিশ্চিত নয়।

গণধর্ষণের অভিযোগ খারিজ:

তরুণীর পরিবারের তরফে যে গণধর্ষণের অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা খারিজ করেছেন। ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি, যা ঘটনাটিকে অন্য দিকে মোড় দিয়েছে। এই অভিযোগ খারিজ হওয়ার ফলে আত্মহত্যার তত্ত্ব জোরালো হচ্ছে, তবে পুলিশ এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে চাইছে না।

তদন্তের বর্তমান অবস্থা:

পুলিশ এবং ফরেনসিক দল এখনও পুরো ঘটনাটিকে নিয়ে কাজ করছে। তরুণীর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে আরও তথ্যের প্রয়োজন, বিশেষ করে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এবং অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই। পাশাপাশি, তরুণীর মানসিক অবস্থা এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তদন্ত চলছে, যেখানে উঠে আসতে পারে এমন তথ্য যা তার আত্মহত্যার সম্ভাবনাকে জোরদার করবে।