এক ছোবলে ছবি! পৃথিবীর ৫ টি সবথেকে বিষধর সাপের সম্পর্কে জানুন
কিং কোবরা পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ বিষধর সাপ, যা প্রায় ১৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এটি প্রধানত ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বনাঞ্চলে দেখা যায়। বিষের ধরন: কিং কোবরা সাধারণত নিউরোটক্সিক বিষ নিঃসরণ করে, যা স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয় এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করে।
খবর সাতদিন ডেস্ক, 27 অক্টোবর: বিশ্বে বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ রয়েছে, যাদের বিষ এতটাই মারাত্মক যে এটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপগুলির মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাপ হল ইনল্যান্ড টাইপান, কিং কোবরা, ব্ল্যাক মাম্বা, ক্রেইট, এবং র্যাটলস্নেক। এই সাপগুলির বিষের প্রভাব ও আচরণ ভিন্ন এবং তাদের সম্পর্কে বিশদে জানলে আমাদের সচেতনতা বাড়বে।
১. ইনল্যান্ড টাইপান (Inland Taipan)
পরিচিতি: ইনল্যান্ড টাইপান, যা "ফিয়ার্স স্নেক" নামেও পরিচিত, বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপ হিসেবে খ্যাত। এটি প্রধানত অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে পাওয়া যায়।
বিষের ধরন: ইনল্যান্ড টাইপান-এর একটি কামড়ে যে পরিমাণ বিষ থাকে তা ১০০ জন মানুষ বা ২৫০,০০০ ইঁদুরকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এই সাপের বিষে থাকে নিউরোটক্সিন ও হেমোটক্সিন যা স্নায়ু ও রক্তকোষে তীব্র ক্ষতি করে।
আচরণ: এটি খুব লাজুক প্রকৃতির, সাধারণত মানুষের সংস্পর্শে আসতে চায় না। তবুও, বিপদের মুখোমুখি হলে এটি আক্রমণ করতে পারে।
প্রতিকার: ইনল্যান্ড টাইপান-এর বিষ এতটাই শক্তিশালী যে এর জন্য বিশেষ ধরনের অ্যান্টিভেনম প্রয়োজন। সময়মত চিকিৎসা না করলে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
২. কিং কোবরা (King Cobra)
পরিচিতি: কিং কোবরা পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ বিষধর সাপ, যা প্রায় ১৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এটি প্রধানত ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বনাঞ্চলে দেখা যায়।
বিষের ধরন: কিং কোবরা সাধারণত নিউরোটক্সিক বিষ নিঃসরণ করে, যা স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয় এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করে।
আচরণ: কিং কোবরা নিজেকে এবং তার ডিমের রক্ষা করতে খুব আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। এর কামড়ে বিষ খুব দ্রুত সঞ্চালিত হয় এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না করলে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
প্রতিকার: কিং কোবরা কামড়ের জন্য অ্যান্টিভেনম প্রয়োজনীয় হলেও এটি দ্রুত সরবরাহ করা অত্যন্ত জরুরি।
৩. ব্ল্যাক মাম্বা (Black Mamba)
পরিচিতি: ব্ল্যাক মাম্বা আফ্রিকার অন্যতম বিষধর সাপ। এটি দ্রুতগতির জন্যও বিখ্যাত, প্রায় ১২ মাইল প্রতি ঘণ্টায় চলতে সক্ষম।
বিষের ধরন: ব্ল্যাক মাম্বার বিষ নিউরোটক্সিক, যা স্নায়ুতন্ত্রে দ্রুত কাজ করে। কামড়ে তীব্র ব্যথা ও পক্ষাঘাত সৃষ্টি করে এবং যদি দ্রুত চিকিৎসা না হয়, তাহলে এটি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
আচরণ: ব্ল্যাক মাম্বা আক্রমণাত্মক স্বভাবের এবং হুমকির সম্মুখীন হলে এটি বারবার কামড়াতে পারে।
প্রতিকার: ব্ল্যাক মাম্বার কামড়ের জন্যও বিশেষ ধরনের অ্যান্টিভেনম প্রয়োজন।
৪. ক্রেইট (Krait)
পরিচিতি: ক্রেইট ভারতীয় উপমহাদেশে পাওয়া যায় এবং এটি রাত্রিকালীন। বিশেষ করে, এটি বিভিন্ন দেশের গ্রামাঞ্চলে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে বিবেচিত।
বিষের ধরন: ক্রেইটের বিষ অত্যন্ত শক্তিশালী নিউরোটক্সিক এবং এর কামড়ে প্রথমে ব্যথা হয় না বলে মানুষ দেরিতে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু এটি দ্রুত স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে।
আচরণ: ক্রেইট সাধারণত নিশাচর, তাই এটি রাতে আক্রমণ করে থাকে। মানুষ প্রায়শই ঘুমানোর সময় ক্রেইটের কামড়ের শিকার হয়।
প্রতিকার: এর জন্যও বিশেষ ধরনের অ্যান্টিভেনম প্রয়োজনীয় এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
৫. র্যাটলস্নেক (Rattlesnake)
পরিচিতি: র্যাটলস্নেক আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে বেশিরভাগ পাওয়া যায়। এটি সহজে চেনা যায় কারণ এদের লেজে বিশেষ ধরনের শব্দ হয়।
বিষের ধরন: র্যাটলস্নেকের বিষ হেমোটক্সিক, যা রক্তের কোষ এবং টিস্যু নষ্ট করে দেয়।
আচরণ: র্যাটলস্নেক সাধারণত শান্ত প্রকৃতির, তবে হুমকি অনুভব করলে আক্রমণ করে। এর কামড়ে বিষের দ্রুত প্রভাব পড়ে এবং স্থানীয় টিস্যুতে ব্যথা ও ফোলাভাব সৃষ্টি করে।
প্রতিকার: র্যাটলস্নেকের কামড়ের জন্য অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়।